সফলতা সোনার হরিন। এই সোনার হরিনের পিছনে ছুটছি আমরা প্রতিনিয়ত। সফলতার
সংজ্ঞা এক এক জনের কাছে এক এক রকম। তবে সবাই এক বাক্যে স্বীকার করেন,
ব্যর্থতা সফলতার পেছনের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যদিও এই তথ্যগুলো সব সময়
বাস্তবে প্রয়োগ করা কঠিন হয়। তবে তথ্য-প্রযুক্তির এই যুগে আপনি জানলে অনেক
কিছু করতে পারবেন। যেকারণে আপনাকে জানতে হবে এবং জানাতে হবে নিজেকে। আপনাকে
প্রতিনিয়ত মানুষের ফিডব্যাক এবং সমালোচনাকে শুধরাতে হবে। তবে বার বার
ব্যর্থ হতে থাকলে আপনি একদিন পিছিয়ে যাবেন নিজের কাছে। সেজন্যই আপনার তথ্য
দরকার। আপনি যতো তথ্য জানবেন ততই আপনি নিজেকে ওভারকাম করতে পারবেন।
সফলতা একটি বিশেষ কোন বস্তু নয়, এটি অনেকগুলো কর্মকাণ্ডের সংমিশ্রণ। অনেকগুলো কাজের ফলাফল আপনার সফলতা। সফলতা ছুঁয়ে দেখা যায় না তবে আপনি অনুভব করতে পারবেন। আমরা সফল হতে চাই কিন্তু সফল হওয়ার পেছনের কষ্টগুলো নিতে চাই না। আমরা সফল মানুষের গল্প শুনতে ভালোবাসি কিন্তু সেই সফল মানুষের ভেতরের অনুভতিগুলাকে এড়িয়ে যায়। প্রত্যেকটা মানুষের সফল হওয়ার পেছনে থাকে বহু অনিদ্রা রাত যাপন, বহু বছরের কঠোর পরিশ্রম। সফলতা কখনো এক দিনে পাওয়া যায় না, সফল হতে বহু দিনের অক্লান্ত রাত পার করতে হয়।
ঠিক
এরকমই কিছু মহামানব যারা খুব ছোট থেকে অনেক পরিশ্রম এবং সাধনা করে আজ
পৃথিবীর কাছে চিরস্মরণীয়। তাদের কর্মকান্ড আজ আমাদের কাছে গল্প হয়ে আসছে।
আজ আমরা সেই সব মানুষের কথা শুনবো যারা আজ বিশ্বদরবারে চির-সমাদৃত, কিন্তু
এক সময় ছিলেন আমাদের মতোই সাধারণ। আজ আমরা তাদের উঠে আসার গল্প, সাধনা এবং
ভেতরের অজানা কিছু গল্প শুনবো।
আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি এর আগে আমার পৃথিবীর ব্যতিক্রম এবং ঐতিহাসিক ফ্রিল্যান্সার নিয়ে ৩ টি সিকুয়ালে টিউন পাবলিশ হয়েছিল। যা টিউজিটরদের কাছে অনেক বেশি সমাদৃত হয়। যেখানে আমরা আন্ড্রু কার্নেগীর থেকে শুরু করে এনভাটোর সহ-প্রতিষ্ঠাতা কলিস তায়িদকে তুলে এনেছি সেই তাদের না বলা কথা গুলো। নিচে লিংকগুলো দেওয়া হলো-
নিক
ছিলেন পড়াশোনায় একজন বি ক্যাটাগরির স্টুডেন্ট। তিনি বিলিয়নার হিসাবে
জন্মগ্রহণ করেননি। বর্তমানে তার GoPro ক্যামেরা প্রতিষ্ঠানের আগে তার দুইটা
অনলাইন উদ্যোগ ব্যর্থ হয়।
অবশেষে তিনি বিশ্বের সবথেকে কমবয়সী বিলিয়নার হয়ে উঠেন এবং তার কোম্পানি গোপ্রো ছিল অ্যামেরিকার সবথেকে দ্রুত বেড়ে উঠা কোম্পানি।
বিশ্বের
সবথেকে ধনী ব্যক্তি এবং জানাদু তার আবাস, যেটা কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত,
তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত, মিউজিক এবং লাইটের লক্ষণীয় ব্যবহার। কিন্তু এই
বিলিয়নার ছিলেন এর আগে একজন ব্যর্থ উদ্যোক্তা।
এভাবেই একদিন মাইক্রোসফট বিশ্বের সবথেকে বড় পার্সোনাল কম্পিউটার অপেরেটর হয়ে উঠে।
আমরা সবাই ভাবী সফল মানুষ সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত। এটা নীতিকথা হলেও সত্য ভিন্ন। সৃষ্টি মানুষের কঠোর শ্রমের ফল।
এখন যদিও আমরা দেখি জেমস ডাইসন একজন মোস্ট সফল ব্যক্তি। বিশ্বের সবথেকে নামকরা ব্যাগ লেস ভ্যাকুয়াম ক্লীনার্স এর প্রতিষ্ঠান তার। যা বিশ্বে ৫০ টিরও বেশি দেশে চলছে অবিরত। এটাই তাঁকে বিলিয়নার তৈরি করে। যদিও এর আগে তিনি অনেক প্রতিষ্ঠানে ব্যর্থ হন।
স্টিভ
জবসকে বলা হয় উদ্যোক্তাদের গুরু, যিনি সর্বাধিক বিক্রি হওয়া আইপ্যাড,
আইফোন, অ্যাপেল নোটবুক, আইম্যাক ইত্যাদির আবিষ্কারক। তিনি বর্তমান সময়ের
সবথেকে প্রভাবিত বিজনেস ম্যান এবং তার সৃষ্টি তাঁকে প্রযুক্তি জগতে চির অমর
করে রাখবে।
রিচার্ড
ব্রানসন ছিলেন ব্যর্থদের সর্বোত্তম উদহারন। তিনি ব্যর্থ হতে হতে এতটা পথ
হেঁটেছেন যে তিনি যে সফল হতে পারবেন এটা কল্পনা করা কঠিন ছিল।
সফলতা একটি বিশেষ কোন বস্তু নয়, এটি অনেকগুলো কর্মকাণ্ডের সংমিশ্রণ। অনেকগুলো কাজের ফলাফল আপনার সফলতা। সফলতা ছুঁয়ে দেখা যায় না তবে আপনি অনুভব করতে পারবেন। আমরা সফল হতে চাই কিন্তু সফল হওয়ার পেছনের কষ্টগুলো নিতে চাই না। আমরা সফল মানুষের গল্প শুনতে ভালোবাসি কিন্তু সেই সফল মানুষের ভেতরের অনুভতিগুলাকে এড়িয়ে যায়। প্রত্যেকটা মানুষের সফল হওয়ার পেছনে থাকে বহু অনিদ্রা রাত যাপন, বহু বছরের কঠোর পরিশ্রম। সফলতা কখনো এক দিনে পাওয়া যায় না, সফল হতে বহু দিনের অক্লান্ত রাত পার করতে হয়।

সফল বিলিয়নার, ব্যর্থতা যাদের হার মানাতে পারেনি
আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি এর আগে আমার পৃথিবীর ব্যতিক্রম এবং ঐতিহাসিক ফ্রিল্যান্সার নিয়ে ৩ টি সিকুয়ালে টিউন পাবলিশ হয়েছিল। যা টিউজিটরদের কাছে অনেক বেশি সমাদৃত হয়। যেখানে আমরা আন্ড্রু কার্নেগীর থেকে শুরু করে এনভাটোর সহ-প্রতিষ্ঠাতা কলিস তায়িদকে তুলে এনেছি সেই তাদের না বলা কথা গুলো। নিচে লিংকগুলো দেওয়া হলো-
- ১ম সিকুয়াল – ৫ জন ঐতিহাসিক ফ্রিল্যান্সার যাদের আপনি ফ্রিল্যান্সার হিসেবে জানেন না কিন্তু তাঁরা এই পৃথিবীকে পাল্টে দিয়েছে।
- ২য় সিকুয়াল – আরও ৪ জন ঐতিহাসিক ফ্রিল্যান্সার যাদের আপনি ফ্রিল্যান্সার হিসেবে জানেন না কিন্তু তাঁরা এই পৃথিবীকে পাল্টে দিয়েছে।
- ৩য় সিকুয়াল – আরও ৭ জন ঐতিহাসিক ফ্রিল্যান্সার যাদের আপনি ফ্রিল্যান্সার হিসেবে জানেন না কিন্তু তাঁরা এই পৃথিবীকে পাল্টে দিয়েছে।
১) নিক উডম্যানঃ
সম্পদের পরিমানঃ ১৭৫ কোটি ডলার
নিক উডম্যান - প্রতিষ্ঠাতাঃ GoPro
ব্যর্থতাঃ
প্রথমে তিনি ইম্পেয়ারওয়ল নামে যে ই-কমার্স সাইট তৈরি করেন, যেখানে তিনি কম মূল্যের ইলেক্ট্রনিকস পণ্য সেল করতেন। কোম্পানি খুব ভালো করতে পারছিল না, ফলে তিনি লছ করছিলেন, যেকারণে তিনি এই প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেন। পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালে তিনি ফানবাগ নামে অনলাইন মার্কেটিং কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। এই ওয়েব ছিল গেম নিয়ে কাজ। গেমের মাধ্যমে তিনি বিজনেস করতেন। যারা অংশগ্রহণ করতো তাদের ক্যাশপ্রাইজ দিতেন। এই কোম্পানি ৩.৯ মিলিয়ন অর্থ সংগ্রহ করে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে। কিন্তু ২০০১ সালে তিনি ব্যর্থ হতেই থাকেন। তিনি ক্লায়েন্টের কাছ থেকে ভালো ফিডব্যাক পাচ্ছিলেন না। যেকারনে তিনি এটি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন। এই বিজনেস থেকে তিনি ৪ মিলিয়ন ডলার লছ খান।অবশেষে সফলতাঃ
দুইটি কোম্পানিতে লসের কারণে তিনি একটু ক্লান্ত হয়েছিলেন, যেকারনে তিনি রিফ্রেশমেন্টের জন্য দূরে বেড়াতে যান এবং সেখান থেকে ফিরে এই গোপ্রো ক্যামেরা নিয়ে কাজ শুরু করেন। বিশেষ করে যারা ভ্রমন প্রিয় এবং অ্যাথলেট। যদিও তিনি অনেক বার বলেছেন এই সময় তিনি অনেক ঝুঁকিতে থাকতেন এবং তা থেকে তিনি বের হতে চাইতেন।অবশেষে তিনি বিশ্বের সবথেকে কমবয়সী বিলিয়নার হয়ে উঠেন এবং তার কোম্পানি গোপ্রো ছিল অ্যামেরিকার সবথেকে দ্রুত বেড়ে উঠা কোম্পানি।
২) বিল গেটসঃ
সম্পদের পরিমানঃ ৭২৭ কোটি ডলার
বিল গেটস - সহ-প্রতিষ্ঠাতা, মাইক্রোসফট
ব্যর্থতাঃ
ট্রাফ-ও-ডাটা নামে একটি প্রতিষ্ঠান ছিল বিল গেটসের প্রথম, যেটা ট্রাফিক কাউন্টার এবং ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারদের রিপোর্ট তৈরি করতো। এভাবে এই প্রতিষ্ঠান ট্রাফিককে হেল্প করতো। মূলত ট্রাফ-ও-ডাটা ৮০০৮ নামে এই অ্যাপ যা ট্রাফিক টেপ পড়তে পারতো এবং সেই ডাটা প্রসেস করতো। তারা এই পণ্য বিক্রি করতে শুরু করলো দেশের ভেতর কিন্তু তারা ব্যর্থ হন, কারণ যন্ত্রটা সঠিক ভাবে সবসময় কাজ করতে পারতো না।অতঃপর সফলতাঃ
বিল গেটসের সহযোগী পল অ্যালেন জানান যদিও ট্রাফ-ও-ডাটা ভালোভাবে কাজ করতো না, তবে এরই অভিজ্ঞতা কয়েক বছর পর মাইক্রোসফট গড়তে সহয়তা করেছিল।এভাবেই একদিন মাইক্রোসফট বিশ্বের সবথেকে বড় পার্সোনাল কম্পিউটার অপেরেটর হয়ে উঠে।
৩) জেমস ডাইসনঃ
সম্পদের পরিমানঃ ৩০০ কোটি ডলার
জেমস ডাইসন
এখন যদিও আমরা দেখি জেমস ডাইসন একজন মোস্ট সফল ব্যক্তি। বিশ্বের সবথেকে নামকরা ব্যাগ লেস ভ্যাকুয়াম ক্লীনার্স এর প্রতিষ্ঠান তার। যা বিশ্বে ৫০ টিরও বেশি দেশে চলছে অবিরত। এটাই তাঁকে বিলিয়নার তৈরি করে। যদিও এর আগে তিনি অনেক প্রতিষ্ঠানে ব্যর্থ হন।
ব্যর্থতাঃ
এই ভ্যাকুয়াম তৈরির জন্য তিনি নান ধরণের আইডিয়া তৈরি করতেন, কিন্তু সবগুলা ব্যর্থ হতেই থাকে। এভাবে তিনি দিন দিন পরিবারকে কষ্ট দিচ্ছিলেন। কিন্তু কোন উপায় বের হচ্ছিলো না। তিনি হতাশ হতেন না, কিন্তু বাস্তবতা তাঁকে পিছনে ফেলে দিচ্ছিলো। তিনি নিজেকে এই কাজে উৎসর্গ করছিলেন বলতে গেলে।অবশেষে সফলতাঃ
ব্যর্থতা আপনার সফলতার পথপ্রদর্শক। আপনাকে নিরন্তর চেষ্টা করতেই হবে। ভেঙ্গে পড়লে কোনভাবেই হবে না। কিন্তু সফল ব্যক্তিরা এটাকে ব্যর্থতা না বলে ভিন্ন পথ বলে থাকেন। যেমন টমাস এডিসন বলেছেন ৯৯৯ বার ব্যর্থ হয়েও বলেন। আমি আসলে ৯৯৯ পন্থায় চেষ্টা করেছি। আর ১০০০ বারে সঠিক পথ পেয়ে গেছি। ঠিক ডাইসন এভাবেই নিজেকে ভ্যাকুয়াম ক্লীনার্স এর কাজে সফল পথ খুঁজে পান। আর এখন তিনি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ধনীর একজন।৪) স্টিভ জবসঃ
সম্পদের পরিমানঃ ১০২ কোটি ডলার
স্টিভ জবস - সহ-প্রতিষ্ঠাতা অ্যাপেল
ব্যর্থতাঃ
আমরা আজকে যেই অ্যাপেল দেখছি, এই অ্যাপেল প্রথম দিকে সফলতার মুখ দেখতে পারে নি। তিনি অনেকটা হতাশ হয়ে নেক্সট নামে অন্য কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। নেক্স্যটও ভালো ফল দিচ্ছিলো না, যেকারনে তিনি আবার তার স্বপ্নের অ্যাপেলে ফিরে আসেন। কঠোর সাধনার ফলে তিনি এটিকে ক্রিয়েটিভ ওয়েতে নিয়ে যেতে সামর্থ্য হন।অবশেষে আজকের অ্যাপেলঃ
স্টিভ জবস সব সময় চেষ্টা করতেন কীভাবে নতুন আইডিয়া দিয়ে অন্যের চেয়ে নতুনভাবে শুরু করা যায়। যা অন্য মানুষ নতুন জিনিস হিসাবে নিবে। নতুন নতুন সৃষ্টি তৈরি করবে। এভাবে কঠোর সাধনার ফল আজকের এই প্রযুক্তি চমক অ্যাপেল।৫) রিচার্ড ব্রানসনঃ
সম্পদের পরিমানঃ ৪৬০ কোটি ডলার
রিচার্ড ব্রানসন - ভার্জিন
ব্যর্থতাঃ
ভার্জিন গ্রুপের এই রিচার্ড ব্রানসন প্রথমে মাত্র ১৬ বছর বয়সে একটি ম্যাগাজিন বের করেন। যা তাঁর জীবনে কাল হয়ে দাঁড়ায়। কিছু অহেতুক ঘটনার জন্য তাঁকে কারাবাস করতে হয়। তবে তিনি থেমে থাকতে পছন্দ করতেন না। নিজেকে গড়তে অনেক রকম চেষ্টা তিনি চালিয়ে যান। তিনি ভার্জিনের অনেক পণ্যের পরেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত ভাবতে অনেক সময় পার করতে হয়েছে।সফলতাঃ
রিচার্ড ব্রানসনের সফলতাটা একটু বেশি ভিন্ন ছিল। তিনি অনেক শ্রমের পর আজকের এই অবস্থান তৈরি করেন। তার ভাষায়, ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিন এবং কাজ চালিয়ে যান অবিরত।মন্তব্যঃ
সফলতা জাদুর কাঠি নয় যে, আপনি ছুঁয়ে দিলেই সব কমপ্লিট। আপনাকে নিরন্তর চেষ্টা করতে হবে, এগিয়ে যেতে হবে। সেহেতু নিজেকে সফলদের কাতারে দেখতে নিজেকে সেইভাবে গড়ুন এবং সাধনা করে যান।আপনার কাছে সফলতার ভিন্ন কোন সংজ্ঞা থাকলে টিউমেন্টের মাধ্যমে আমাকে জানাতে ভুলবেন না।ধন্যবাদ সবাইকে।
No comments:
Post a Comment